যে সাবজেক্টে খুব সহজে এ+ পাওয়া যায় তারই নাম আইসিটি। অনেকের কাছেই সব থেকে সহজ এবং মজাদার সাবজেক্ট এটি। একটু চেষ্টা করলেই কয়েকদিন পড়ে আইসিটিতে এ+ পাওয়া যায়। আর তোমাদের সবাইকে আইসিটিতে এ+ পেতে হবে।
কেননা, এর থেকে সহজ এবং মজাদার সাবজেক্ট এইচএসসি সিলেবাসে আর নেই। যাদের প্রস্তুতি একটুও নেই তাদেরকে বলি হতাশ হবার কিছুই নেই। ভালো মার্কস পাবাই৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে পাবো?
প্রথমত,তোমরা সবাই আইসিটি প্র্যাক্টিকেলে ২৫ এ ২৫ পাবে এটা মাস্ট ধরে রাখো। কারন আইসিটি প্র্যাক্টিকেলে কখনোই নাম্বার কম দেওয়া হয় না। ২৫ পেলে এ+ পেতে আর কত নাম্বার লাগবে? মাত্র ৫৫ নাম্বার..রাইট? প্রশ্ন হচ্ছে ৫৫ নাম্বার কীভাবে পাবো?
শুনো,ভাইয়ারা বা আপুরা আইসিটি এমন একটা বিষয় যেটা বুঝে পড়লেই শুধু পড়তে ইচ্ছে হয়। তোমরা অনেকেই শুধু শুধু ভয় পাও। কারণ কি জানো? সবার মুখ থেকে ভয় শুনতে শুনতে তোমরাও ভিরু হয়ে পরো, পরে সত্যিই মনে হয় না জানি কত কঠিন! সবই আমাদের কন্সিয়াস মাইন্ড এর খেলা!
আল্লাহ! আমি তো এটার ম্যাথ পারি না! ৫ম অধ্যায় কিছু পারি না! আমার আইসিটি অনেক কঠিন লাগে ইত্যাদি ইত্যাদি! আরে বোকা! ৫ম অধ্যায় তুমি যেহেতু একদম পারো না! তোমাকে পড়তে হবে কেন ওটা? চার চারটা সহজ অধ্যায় পড়ে আছে যেগুলা রিডিং দিয়ে পড়লেও খাতা ভরে লিখে দিয়ে আসতে পারবে।
তোমার দরকার মাত্র ৫৫ নাম্বার! আইসিটি এমন একটা বিষয় যেটার উত্তর লিখলেই ফুল নাম্বার দিবে। তুমি সিওর থাকো ৫০ এ তুমি চোখ বন্ধ করে ৪০ পাবাই। তাহলে MCQ এ মাত্র ১৫ নাম্বার পাবা না? আইসিটির রিটেনে ম্যাক্সিমাম Student ৪৫+ নম্বর পায়। কেনো পায়? তারা আইসিটি খুব সহজে বুঝে পড়তে পারে। তোমাকেও পারতে হবে। হ্যাঁ,পারতে হবেই।
এখন আসি কী পড়বো? প্রশ্ন কীভাবে আসবে?
১ম অধ্যায়: গ্লোবাল ভিলেজের উপাদান,ভার্চুয়াল রিয়েলিটি,ক্রায়োসার্জারি,বায়োমেট্রিক্স,জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যানো টেকনোলোজি।
মাত্র এই পাঁচটা টপিক পড়লেই তুমি এখানে ১০ এর মধ্যে মিনিমাম ৯ পাবেই। এখানের গ,ঘ তে প্রশ্ন আসবে উপরের যেকোনো পাঁচটা টপিকের একটা উদ্দীপকে তুলে দিয়ে বলবে উপরের উদ্দীপকে কোন টপিকসের কথা বলা হয়েছে,ব্যাখা কর। কিংবা চিকিৎসা ক্ষেত্রে/যেকোনো ক্ষেত্রে উপরোক্ত প্রযুক্তিটি কীভাবে সহায়তা করে? তুমি এই টপিকসগুলা জাস্ট রিডিং আকারে পড়লেও চোখ বন্ধ করে লিখে দিয়ে আসতে পারবে। মাত্র তিনটা ঘন্টা মনোযোগ দিয়ে পড়লেই এই অধ্যায় শেষ হয়ে যাবে।
২য় অধ্যায়: ডেটা ট্রান্সমিশন(মোড,মাধ্যম,এলিমেন্ট),ওয়াইফাই,ওয়াইম্যাক্স,হাব ও সুইচ, নেটওয়ার্ক,ক্লাউড কম্পিউটিং।
এই কয়েকটা টপিকস পড়লেই এনাফ! তবে এই অধ্যায়ের সব থেকে ইম্পরট্যান্ট টপিকস হচ্ছে নেটওয়ার্ক টপোলজি। এখান থেকে প্রশ্ন হবে মূলত ছয়টা নেটওয়ার্ক ট্রপোলজির একটা দিয়ে বলবে উপরে কোন নেটওয়ার্কের কথা বলা হয়েছে? কাজ কি? ব্যাখা কর! মন দিয়ে দুই-আড়াই ঘন্টা পড়লেই এই অধ্যায় শেষ হয়ে যাবে। জাস্ট স্টার,রিং,বাস,ট্রি বাকি নেটওয়ার্কের কাজগুলা আর টপিকসটা বুঝে নিবা। যেনো পরিক্ষায় উদ্দীপকে কোনটার কথা বলা হয়েছে সেটা বুঝতে পারো।
৩য় অধ্যায়: ২ এর পরিপূরক,লজিক গেইট,সার্বজনীন গেইট,এনকোডার,ডিকোডার,হাফ/ফুল এডার বাস্তবায়ন। ডি মর্গানের সমীকরনটা জাস্ট মুখস্থ করো। খ নং এ আসতে পারে।
মূলত এই অল্প কয়েকটা টপিকস পড়লেই শেষ! এই অধ্যায় নিয়েই অনেকের মাথা ব্যাথা! ম্যাথ পারি না এটা সেটা! আসলে এই অধ্যায়টা অনেক মজার! কিছু না পারলেও লজিক গেইট পড়ে যেও। এটা সব থেকে মজার অধ্যায়,বুঝে মন দিয়ে পড়লে দুই-তিন ঘন্টায় এই অধ্যায় শেষ। ট্রাস্ট মি। এই অধ্যায় থেকে এন্সার করলে স্যার ১০ এ ১০ দিতে বাধ্য।
৪র্থ অধ্যায়: ওয়েবসাইট কাঠামো,HTML,টেবিল তৈরি,ছবি সংযোজন, hyper link সংযোজন। মাত্র এই কয়েকটা টপিকস। এটা খুব ছোট অধ্যায়। এই অধ্যায়ের ব্যাখামূলক পড়া হচ্ছে ওয়েবসাইট কাঠামো, যেটা খুবই সহজ আর মজার। এই কাঠামো থেকে মূলত প্রশ্ন আসলে আসবে উদ্দীপকটি ট্রি নাকি হাইব্রিড নাকি লিনিয়ার কাঠামো? ব্যাখা কর এই টাইপ প্রশ্ন। খুবই সহজ। মাত্র ১০ মিনিট পড়লেই কাঠামোর কাহিনী শেষ! ভাইয়া পরে এই ব্যাপারে শর্টকাট দিয়ে দিবো। মাত্র এক থেকে দেড় ঘন্টা মন দিয়ে বুঝে পড়লে এই অধ্যায় খতম!
৫ম অধ্যায়: কম্পাইলার,ইন্ট্রারপোলার,ডেটা টাইপ, অ্যালগরিদম ও ফ্লোচার্ট(সেলেসিয়াস ও ফারেনহাইট,লিপ ইয়্যার,সমান্তর ধারা,গ.সা.গু,ফ্যাক্টেরিয়াল প্রোগ্রাম)
এই অধ্যায় নিয়ে তোমরা অনেকেই ভয় পাও! তাই এটা নিয়ে বেশি কিছু বলবো না। কিন্তু ট্রাস্ট মি এই অধ্যায়টা অনেক সহজ এন্ড মজার। গ,ঘ নংয়ে একটা প্রোগ্রাম লিখে দিবা ৪ এ ৪ পেয়ে যাবা।
৬ অধ্যায়: DBMS,কি ফিল্ড,রিলেশনশিপ, ডেটাবেস,সিকিউরিটি।
এটা সব থেকে ছোট অধ্যায়। মূলত ৩ টা রিলেশনশিপের কাহিনী বুঝলেই এই অধ্যায় শেষ! এই অধ্যায় থেকে মূলত প্রশ্ন আসতে পারে, উদ্দীপকে যেকোনো একটা রিলেশনশিপের উদাহরণ দিবে তুমি সিলেক্ট করবা এটা কোন রিলেশন আর সেটা ব্যাখা করবা। রিলেশনের কাহিনী বুঝতে মাত্র ২ মিনিট লাগবে। মন দিয়ে মাত্র এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় দিলে এই অধ্যায় শেষ।
আইসিটি নিয়ে এত্ত ভয় পাবার কিছু নেই। যারা একদমই পারো না তারা ১,২,৪,৬ আগে সিলেক্ট করো চোখ বন্ধ করে চারটা ভালোভাবে লিখে দিয়ে আসতে পারবে। ১,২,৬-এ বুঝার তেমন কিছু নেই। মন দিয়ে পুরো অধ্যায় রিডিং পড়লেই সব পারবে। যারা মোটামুটি ভালো পারো তারা পুরা বই রিভিশন দেওয়ার ট্রাই করো। খুব বেশি টাইম লাগবে না। আইসিটি প্রত্যেকটা অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসবে। ৩য় আর ৫ম অধ্যায় থেকে দুইটা করে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। বাকি চারটা থেকে চারটা! মোট আটটি প্রশ্ন আসবে পাঁচটা উত্তর দিতে হবে। তাই আগে সহজ যেকোনো চারটা অধ্যায় সিলেক্ট করো। আইসিটিতে রিটেনে ৪৫+ নাম্বারও পাওয়া খুব সহজ। আর ৪০ তো চোখ বন্ধ করে পাওয়া যায়।
পরিশেষে, প্লিজ তোমরা আইসিটি একটু ভালো করে পড়ো। খুব সহজে এ+ পাবে। প্লিজ! আমার রিকুয়েস্ট কেউ এই সাবজেক্টে এ+ মিস করো না! এই সহজ সুযোগ মিস কইরো না। পরে দেখবা বুঝতে পারবা এইটা কত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো । সহজ একটা সাবজেক্টএ A+ মিস করলে কঠিন গুলোতে কি করবে? আমার অনুরোধটা রাখো। একটু চেষ্টা করলে তুমি পারবেই। মোবাইল টা রাখো, এখনি পড়তে বসো। ভালো থেকো আল্লাহ হাফিজ ।
6 comments