SkyIsTheLimit
Bookmark

গ্রীষ্মকাল অনুচ্ছেদ রচনা


ঋতু বছরের একটি বিশেষখণ্ড যা নির্দিষ্ট কোন সূত্রের ভিত্তিতে স্থির করা হয়।স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে বছরের ঋতু বিভাজন করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত ও শীত- এই চারটি প্রধান ঋতু দেখা যায়।বাংলা বর্ষের শুরু হয় গ্রীষ্ম দিয়ে।গ্রীষ্ম কে সকল ঋতুর নায়ক ও বলা হয়ে থাকে।বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল,গ্রীশ্মকালে প্রকৃতি তে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, গ্রীষ্মের আগমনে বাংলার প্রকৃতিতে রুক্ষতা নেমে আসে।এ সময় আবহাওয়া থাকে শুষ্ক ও গরম।অসহনীয় সূর্যতাপে নদ-নদী, খাল-বিলের পানি কমে যায়; মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে যায়। প্রচণ্ড রোদে গাছের সবুজ, সতেজ রং বিবর্ণ হয়ে যায়। গ্রীষ্ম প্রকৃতির এই রুক্ষতার রূপ দেখেই কবি বলেছেন—

ঘাম ঝরে দরদর গ্রীষ্মের দুপুরে,
খাল-বিল চৌচির জল নেই পুকুরে।’

এই সময়েই আবার কালবৈশাখীর দুরন্ত ঝোড়ো হাওয়ায় সব কিছু ওলট-পালট হয়ে যায়। হঠাৎ করে আকাশে কালো মেঘের ছোটাছুটি, বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে কানে তালা লাগা প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হয়। তারপর ঝড় ও বৃষ্টি। প্রকৃতিতে রঙের নানা রকম খেলা চলে। তাই গ্রীষ্ম শুধু পোড়ায় না, অকৃপণ হাতে দান করে আম, জাম, লিচু, কলা, কাঁঠাল ও তরমুজের মতো ফল। লাল, হলুদ, সবুজ, কালো, কমলা রঙের এই বাহারি ফলগুলোর স্বাদও মিষ্টি।গ্রীষ্ম হলো বছরের উষ্ণতম কাল, যা পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সাধারণত জুন, জুলাই এবং আগস্ট জুড়ে অবস্থান করে। পৃথিবীর সর্বত্রই গ্রীষ্ম হলো কর্মোদ্যমের সময়। বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশগুলোতে গ্রীষ্ম খুবই আরাধ্য, কারণ সেসকল দেশে শীতকালে কোনো ফসল উৎপাদিত হয় না, গ্রীষ্মকালেই সব ফসল উৎপাদন করে রাখতে হয়।
বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী প্রথম দুই মাস বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ জুড়ে গ্রীষ্মকাল। এই সময় সূর্যের প্রচন্ড তাপে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভূমি, পানি শুকিয়ে যায়, অনেক নদীই নাব্যতা হারায়, জলশূণ্য মাটিতে ধরে ফাটল। গ্রীষ্মকালের শেষার্ধ্বে সন্ধ্যাসমাগত সময়ে ধেয়ে আসে কালবৈশাখী ঝড়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এসময় গাছে গাছে বিভিন্ন মৌসুমী ফল দেখা যায়, যেমন: আম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুয়ায়ী এর পরের ঋতুটিই হলো বর্ষাকাল। সেসময় প্রচন্ড বৃষ্টিপাত গ্রীষ্মকালীন সব তপ্ততা মিটিয়ে দেয়।

গ্রীষ্মে ফোটা ফুল হচ্ছেঃ অর্জুন, ইপিল ইপিল, কনকচূড়া, করঞ্জা, কামিনী, ক্যাজুপুট, গাব, জারুল, জ্যাকারান্ডা, তেলসুর, দেবদারু, নাগকেশর, নাগেশ্বর, নিম, পরশপিপূল, পলকজুঁই, পাদাউক, পারুল, পালাম, বনআসরা, বরুণ, বাওবাব, বেরিয়া, মাকড়িশাল, মিনজিরি, মুচকুন্দ, মেহগনি, রক্তন, সোনালু, স্বর্নচাঁপা ইত্যাদি।

গ্রীষ্মকালিন ফল হচ্ছেঃ আম, জাম, জামরুল, কাঠাল, আনারস, পেয়ারা, লিচু, তরমুজ, আমড়া প্রভৃতি সুস্বাদু ফল এ ঋতুতেই জন্মে।গ্রীষ্মকাল ফলের ঋতু

এ ঋতুতে দিন বড় আর রাত ছোট হয়। এ সময় পশ্চিমা মৌসুমি বায়ু দেশের উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। আবার পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শীতল ও শুষ্ক বায়ুও প্রবাহিত হয়। মহাসাগর থেকে আগত মেঘতাড়িত বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে শীতল ও শুষ্ক বায়ু মুখোমুখি পরস্পরের সংস্পর্শে এলে তা প্রবল ঝড়ের রূপ ধারণ করে। ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের এ দুটি বায়ুপুঞ্জসৃষ্ট ঝড়কে কালবৈশাখী নামে আখ্যায়িত করা হয় যার ধ্বংসাত্মক রূপ এ ভূখন্ডের অধিবাসীদের কাছে অতি পরিচিত।
গ্রীষ্ম দিয়েই শুরু হয় বাংলা বর্ষ। গ্রীষ্মের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের-এর প্রথম দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। এ ঋতুতে হিন্দুরা জামাইষষ্ঠীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।

লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
1 comment

1 comment

  • Unknown
    Unknown
    05 October, 2020
    It's really helpful for me....
    Reply