মূলভাব : জীব ঈশ্বরের সৃষ্টি। জীবের মাঝেই ঈশ্বরের উপস্থিতি। ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টিকে ভালােবাসেন। ঈশ্বরের সৃষ্টকে যে ভালােবাসে, ঈশ্বরও তাকে ভালােবাসেন। তাই ঈশ্বরকে পেতে হলে ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবকেই ভালােবাসতে হবে। জীবকে ভালােবাসলে ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্যে অন্য কিছু না করলেও চলে।
সম্প্রসারিত ভাব : ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করে, সেই সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। তাঁর সৃষ্টির বৈচিত্র্যের মধ্যেই তার নিত্য প্রকাশ ঘটছে বলে, তাঁর সৃষ্টিকে ভালােবাসলে, তাঁকে ভালােবাসা হয়। সৃষ্টির সেরা জীব হচ্ছে মানুষ। মানবধর্মকে সামনে রেখে ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের প্রতি মমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে ঈশ্বরের নিকটে আসা যায়। পথের যে কুকুর তার প্রতিও মায়া প্রদর্শন করা উচিত। ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্যে অনেক মানুষ ধর্ম-কর্ম পালন করে থাকে এই ভেবে যে, শুধু ধর্ম-কর্ম পালন করলেই বুঝি ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে। এ ধারণা থেকে এসব মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের প্রতি ঔদাসীন্য প্রদর্শন করে থাকে। ধর্ম-কর্ম অবশ্যই পালনীয় । তাই বলে জীবের প্রতি উদাসীন হলে চলবেনা। কেননা সকল জীবের মাঝেই ঈশ্বর বিরাজমান। ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবকে অবহেলা, অবজ্ঞা বা অত্যাচার করে ঈশ্বরের প্রতি যতই আত্মনিবেদন করা হােক না কেন, ঈশ্বর তা গ্রহণ করবে না। এ সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে স্পষ্ট বলা আছে যে, ঈশ্বরকে পেতে হলে আগে তাঁর সৃষ্ট জীবকে ভালােবাসতে হবে। প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের প্রতি সেবামূলক মনােভাব যাদের মাঝে বিদ্যমান সেসব মানুষ ঈশ্বরের নৈকট্য লাভে অধিকতর সফল হয়।
মন্তব্য : ঈশ্বরের নৈকট্য লাভ করতে অবশ্যই ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের প্রতি সেবামূলক মনােভাব প্রদর্শন করা উত্তম কাজ। ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির যারা প্রেমিক তাদের প্রতি স্বাভাবিকভাবেই কৃপা প্রদর্শন করে থাকেন।
Post a Comment