মূলভাব : প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জীবনের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ সম্পর্ককে আধিপত্যের দিকে না নিয়ে নিজেদের স্বার্থে মৈত্রীর দিকে নিয়ে যেতে চাইছে।
সম্প্রসারিত ভাব : প্রকৃতি মানুষের প্রকৃত বন্ধু। তার রয়েছে স্বাভাবিক ধর্ম। এ স্বাভাবিক ধর্ম ব্যাহত হলে প্রকৃতিই মানুষের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। দুঃখজনক হলেও সত্য- নগর-সভ্যতার বিনির্মাণে অবিবেচকের মতাে ধ্বংস করা হয়েছে, প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে মানব সম্প্রদায় প্রকৃতির ওপর সম্মিলিত আধিপত্য চালিয়ে গেছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বনভূমি উজাড়, অবাধে প্রাণী হত্যা, নদীর গতি পরিবর্তন, পরিকল্পনাহীন শিল্প-প্রতিষ্ঠান নির্মাণ প্রভৃতি কারণে প্রকৃতি আজ অস্তিত্ব-সংকটে, যা মানুষের অস্তিত্ব ধ্বংসেরই নামান্তর। প্রকৃতির ওপর এত অনাচার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করছে। ঝড়, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প ইত্যাদি বিরামহীন ঘটেই চলেছে। মুহূর্তে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে নগর-সভ্যতা-জীবন। প্রকৃতির এ রুদ্ররূপ মানুষকে সতর্ক ও নমনীয় করে তুলেছে। মানুষের উপলব্ধিতে এ অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়েছে আধিপত্য বিস্তার নয়; বরং সমান্তরাল মৈত্রী স্থাপনের মাধ্যমেই প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে। তাহলেই রক্ষা পাবে পৃথিবী ও মানবসম্প্রদায়। পরিবেশ-সচেতন আধুনিক মানুষের আজ এ ধারণা। তাই মানুষ আজ চেষ্টা করছে প্রকৃতির সঙ্গে সদ্ভাব গড়ে তুলবার।
মন্তব্য : মানবসভ্যতা ও মানবের অস্তিত্বের সঙ্গে প্রকৃতির স্বাভাবিক যে সম্পর্ক বিদ্যমান সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে প্রকৃতির ওপর আধিপত্য বিস্তার না করে প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রী-সম্বন্ধ স্থাপন করতে হবে।
2 comments