মূলভাব : পরাধীন জাতির পক্ষে স্বাধীনতা অর্জন অত্যন্ত কঠিন কাজ। স্বাধীনতা অর্জিত হলেই তা চিরস্থায়ী হয় না। অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আরাে কঠিন কাজ। তাই স্বাধীনতা রক্ষায় জাতিকে থাকতে হবে সদাজাগ্রত।
সম্প্রসারিত ভাব : স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। আর মানুষ মাত্রই স্বাধীনতাপ্রিয়। তার জীবনের প্রধান আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতা। স্বাধীনতা কথাটি যতই মধুর হােক না কেন এটা অর্জন করা বড়ই কঠিন। এটাকে পাওয়ার জন্যেই মানুষ যুগ যুগ ধরে সংগ্রাম করে আসছে। নিপীড়িত, অত্যাচারিত জাতি স্বীয় মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রাখার জন্যে সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্তিলাভ করে থাকে। কিন্তু এ মুক্তি অর্জনই মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। একে সমুন্নত রাখাই মুখ্য উদ্দেশ্য। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের পুনর্গঠন, উন্নয়ন ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে একে রক্ষা করার জন্যে সদাপ্রস্তুত থাকা একান্ত প্রয়ােজন। স্বাধীনতা লীভের পর পরাধীনতার মতাে জীবনযাপন না করে বলিষ্ঠ ও আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে স্বাধীনতাকে অম্লান রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। তবেই অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব। অপরপক্ষে, স্বাধীনতা লাভ করেই কোনাে জাতি যদি আত্মতুষ্টি অনুভব করতে শুরু করে, জাতি গঠনে সর্বস্ব নিয়ােগ না করে স্বার্থপরতায় মগ্ন থাকে, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন না থাকে তবে অর্জিত ঈপ্সিত স্বাধীনতা ভূলুষ্ঠিত হয়ে পড়বে। তাই মানুষের যাবতীয় কার্যকলাপের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত স্বাধীনতাপূর্ণ গৌরবােজ্জ্বল জীবনের বিকাশ, অর্জিত স্বাধীনতা সুরক্ষা করেই তা করতে হবে।
মন্তব্য : একটি জাতিকে কঠিন ত্যাগ, কঠোর পরিশ্রম, অবিচল সাধনার মাধ্যমে স্বাধীনতার সূর্যকে অর্জন করতে হয়। তাই স্বাধীনতার ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা সকলের জাতীয় কর্তব্য।
Post a Comment