মূলভাব : মানুষের জীবনে পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি ও সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা কোনােটিই শুভ নয়। এ দুইয়ের মাত্রা বেড়ে গেলে জীবনে বিনাশ ও বিপর্যয় নেমে আসে।
সম্প্রসারিত ভাব : সীমাহীন অভাববােধ যেমন মানুষকে কখনাে মানসিক শান্তি দিতে পারে না তেমনই পরিপূর্ণ সন্তুষ্টিবােধও মানুষের অধিকার সচেতন করতে পারে না। একথাটি ব্যক্তিজীবনের ক্ষেত্রে যেমন প্রযােজ্য তেমনই জাতীয় জীবনের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযােজ্য। কেননা মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেড়ে গেলে অপ্রাপ্তি বেড়ে যায় আর অপ্রাপ্তি বেড়ে গেলে সমাজে আবির্ভাব ঘটে দুর্নীতি অন্যায় ও নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের। এ কারণে জাতীয় স্বার্থকে সবসময় ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে রাখতে হবে। অনুরূপভাবে নিজেদের অবস্থান নিয়ে মানুষের মনে যদি সন্তোষবােধ বেড়ে যায় তাহলে সে আর নিজের উন্নতির চিন্তা করে না। ধীরে ধীরে সে নিজের অধিকার সম্পর্কে অসচেতন ও কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। আর জাতীয় ক্ষেত্রে এ সন্তুষ্টিবােধ অভিশাপস্বরূপ। কোনাে জাতি যদি নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অসচেতন হয়ে পড়ে তবে সে জাতির উন্নতি সম্ভব নয় এবং অন্য কোনাে জাতিগােষ্ঠী তাদের সন্তুষ্টির সুযােগ নিতে কুণ্ঠাবােধ করবে না। এ কারণে বৈশ্বিক অগ্রগতির প্রতিযােগিতায় টিকে থাকতে গেলে কোনাে বিষয়ে পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট হলে চলবে না। নিজেদের অবস্থানকে আরাে বেশি সুদৃঢ় করার একটা প্রবণতা আমাদের থাকতে হবে। নিজের অধিকার, দেশের অধিকার আদায়ে সদা সচেতন থাকতে হবে। একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, আমাদের ব্যক্তিজীবনের উন্নতি মানে সমাজের উন্নতি। আর সমাজের উন্নতি মানে দেশের উন্নতি। তাই পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট হয়ে আমরা নিজেদের এবং দেশের অগ্রগতিকে যেন বাধাগ্রস্ত না করি।
মন্তব্য : জীবনে অতিমাত্রায় আকাঙ্ক্ষা যেমন ভালাে নয় তেমনই নিজের অধিকার সম্পর্কে অতিমাত্রায় উদাসীনতাও কাম্য নয়। কারণ এ দুটি জিনিস বেড়ে গেলে ব্যক্তিজীবনের ন্যায় জাতীয় জীবনেও বিনাশ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
Post a Comment