মূলভাব : দেশ, দেশের মানুষ ও ন্যায়ের প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা প্রয়ােজনে হাসিমুখে প্রাণ উৎসর্গ করে, অমরত্ব একমাত্র তাদেরই প্রাপ্য।
সম্প্রসারিত ভাব : প্রবাদ আছে- 'মৃত্যুর শীতল হস্ত, রাজার ওপরও পতিত। অর্থাৎ মৃত্যু অনিবার্য, এর করালগ্রাস থেকে কারাে নিষ্কৃতি নেই। তবে মৃত্যুর শ্রেণিভেদ আছে। মৃত্যু কখনাে কাপুরুষোচিত, কখনাে স্বাভাবিক, কখনও বীরের। বীরােচিত মৃত্যুই মানুষকে অমরত্ব দান করে। মানুষমাত্রেরই অমরত্ব লাভের তীব্র ইচ্ছা। কিন্তু শত চেষ্টায়ও মানুষ মৃত্যুকে এড়াতে পারে না। আবার মৃত্যুর মধ্য দিয়েই মানুষ নতুন করে বাঁচে অনন্তকাল । যেমনিভাবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের বুকে আজও বেঁচে আছেন শহিদ। বীর মুক্তিযােদ্ধাগণ। এ বেঁচে থাকা আর স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকার পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। এর জন্যে প্রয়ােজন সাহসী সৈনিকের প্রত্যয়দীপ্ত মৃত্যু। কাপুরুষদের কাছে বেঁচে থাকা হলাে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দুয়ারে কড়া নাড়ার শামিল। অন্যদিকে, সাহসীরা মৃত্যুকে সঙ্গী করে জীবনকে উপভােগ করে বীরের মতাে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে গৌরবদীপ্ত অমর জীবন লাভের প্রয়ােজনে মৃত্যু অপরিহার্য। এ রকম অন্ত বাঁচার জন্যে মৃত্যুকে হাসিমুখে আলিঙ্গন করতে হয়। দেশের সূর্যতরুণ বীর সৈনিক এমন মৃত্যুকে মহান ও গৌরবজনক মনে করে। কারণ জীবনের জন্যে অনিবার্য মৃত্যুকে বরণ করার মধ্য দিয়েই সে পৃথিবীতে অমরত্বের জয়মাল্য ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তাই বলা হয়েছে, প্রয়ােজনে যে মরতে জানে, বাঁচার অধিকার একমাত্র তারই।
মন্তব্য : মহান মৃত্যুই মানুষকে অমরত্ব দান করে। কাপুরুষোচিত মৃত্যু মানুষকে চিরদিনের জন্যে ধ্বংস করে। মহান মৃত্যুকে দেশ ও জাতির প্রয়ােজনে আলিঙ্গন করলে গৌরব ও অমরত্ব লাভ করা যায়।
Post a Comment