SkyIsTheLimit
Bookmark

পড়িলে বই আলােকিত হই না পড়িলে বই অন্ধকারে রই ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব : আমাদের জ্ঞানের আধার হচ্ছে বই। বইপড়া আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে সম্প্রসারি করে। অন্যদিকে, বই পড়ার অভ্যাস না থাকলে মানুষের মন অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে। 
সম্প্রসারিত ভাব : বই আমাদের জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটায়। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা নানা অজানাকে জানতে পারি। বই আমাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করে তােলে। শিক্ষিত জাতির মেরুদণ্ড হচ্ছে বই। আবার সেই বইকে হতে হবে রুচিসম্পন্ন। কেননা অরুচিশীল বই পাঠে পাঠকের মেরুদণ্ড ভেঙে ভবিষ্যৎকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাই ভালাে বই যেমন পাঠ করা দরকার, তেমনি মন্দ বই বর্জন করা দরকার। মানসম্মত বই-ই পারে মানুষের জীবনকে বদলে দিতে। জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হলে বই অবশ্যই পড়তে হবে। কেননা বই যতই পড়া যাবে বিচিত্র জ্ঞানের ভাণ্ডার ততই বৃদ্ধি পাবে। এ বিশ্বের বড় বড় জ্ঞানী ব্যক্তিরাই ছিলেন বই-প্রেমিক। কবি ওমর খৈয়াম তার কল্পিত স্বর্গভূমিতেও বইয়ের প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন। "তিনি বলেছেন রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালাে চোখ ঘােলাটে হয়ে আসবে.... কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা যদি তেমন বই হয়।" পল্লিকবি জসীমউদ্দীন বলেন, বই-ই জ্ঞানের প্রতীক, বই আনন্দের প্রতীক। প্রমথ চৌধুরী বই পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁর 'বই পড়া প্রবন্ধে বলেছেন "আমাদের মনে হয় এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়।” এ লাইব্রেরিতেই থাকে বই যা জ্ঞানের দ্বার খুলে দেয়। শুধু পাঠ্যসূচির কয়েকটি বই পড়ে জ্ঞানের পূর্ণতা অর্জন করা যায় না। এ জন্য বহুমুখী প্রতিভা অর্জন ও বিচিত্র জ্ঞানের জন্য নানা ধরনের বই পড়তে হবে। জ্ঞানার্জনের নির্দিষ্ট বই এবং নির্ধারিত কোনাে সীমা নেই। বই পড়ার মধ্য দিয়ে মানুষ বিশাল জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করে এবং অজানা দিগন্তে উদ্ভাসিত হয়। বই মানুষের মনকে সরল, সচল ও সমৃদ্ধ করে তােলে। মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশ্য, অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন এই সকলের সমবায়ে বই এর জন্ম। দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস বইয়ের ভেতরেই সােল্লাসে সবেগে বয়ে চলেছে। বিশ্বসাহিত্যের অনেক বই আছে যা আমাদের জ্ঞানের দ্বার খুলে দেয় যেমন- হােমার-এর ইলিয়ড ও ওডিসি', ফিয়ােদর দস্তয়ভস্কির ক্রাইম এ্যান্ড পানিশমেন্ট' (অপরাধ ও শাস্তি) যা পড়ে বশ সমাজ সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। শিশুদের জন্য অনেক শিশুতােষ বই আছে যেমন- সুকুমার রায় এর ছড়া ও গল্পের বই প্রভৃতি। কারণ শিশু বয়স থেকেই আমাদের পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মানুষের ক্ষুধা দুধরনের। একটা হলে দৈহিক ক্ষুধা, অন্যটি মানসিক ক্ষুধা। দৈহিক ক্ষুধার চাহিদা সাময়িক ও সহজলভ্য। কিন্তু মানসিক ক্ষুধা পূরণ করা কঠিন। এ ক্ষুধা হলাে জ্ঞানের ক্ষুধা, আর জ্ঞানরাজ্যের ক্ষুধা মেটানাের প্রধান মাধ্যম হলাে বই। বই আত্মার খােরাক জোগায়। অন্ধকার যেমন আলাে ছাড়া দূরীভূত করা যায় না, তেমনি বই ছাড়া কেউ জ্ঞানী হতে পারে না। যে জাতি যত বেশি বই পড়ে সে জাতি তত বেশি উন্নত। তাই আমাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 
মন্তব্য: বই পড়ার অভ্যাস মানুষকে ব্যক্তি হিসেবেও উন্নত করে তােলে। আর যাদের বই পড়ার অভ্যাস নেই তার জ্ঞানের আলাে থেকে বঞ্চিত হয়ে অন্ধকারেই পড়ে থাকে। তাই ব্যক্তিমনকে আলােকিত করতে এবং সমাজকে উন্নত করতে বই পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। 

লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
Post a Comment

Post a Comment