মূলভাব : শিক্ষক শিক্ষার্থীকে শিক্ষার দিকনির্দেশনা দেন। শিক্ষার্থীর সেই দিকনির্দেশনা গ্রহণ করে সফল হয়ে ওঠাই হলাে সুশিক্ষিত হয়ে ওঠার নামান্তর। তবে প্রতিটি সুশিক্ষিত মানুষই স্বশিক্ষিত।
সম্প্রসারিত ভাব : জন্মের পর থেকেই মানুষ তার পরিবার, পরিবেশ, আত্মীয়-পরিজন থেকে শিক্ষাগ্রহণ শুরু করে এবং একটা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ করে সনদপত্র লাভ করে। কিন্তু এ স্বীকৃতি কিংবা পরীক্ষায় পাস করাই প্রকৃত শিক্ষা নয়। প্রকৃত শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়া কিংবা ভালাে ফলাফল করলেই প্রকৃত শিক্ষিত হওয়া যায় না। স্ব-অর্জিত শিক্ষাই মানুষকে সুশিক্ষিত করে তুলে। এসব অনেক সময় শিক্ষার্থীর প্রকৃত শিক্ষার সীমাবদ্ধতাকে আড়াল করে শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব প্রদর্শন সম্ভব করে তুললেও এটাকে সুশিক্ষা বলা যায় না। স্ব-অর্জিত শিক্ষাই মানুষকে সুশিক্ষিত করে তােলে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জ্ঞানচর্চা এবং জ্ঞান আহরণের পথকে অনেক সময় সুগম করে তুললেও জ্ঞানের পূর্ণতা আসে। না। নিজ চেষ্টায় যে তার বুদ্ধিবৃত্তিকে পরিচালিত করে অসাধারণ পর্যায়ে নিয়ে যায়, তার মধ্যে মৌলিকতার উন্মেষ ঘটে। এজন্যে দরকার একাগ্রতা ও প্রচুর পরিশ্রম। এর ফলেই জ্ঞানের গভীরতম প্রদেশে প্রবেশ করা সম্ভব। স্বীয় চেষ্টা দ্বারাই মানুষ তার বুদ্ধিবৃত্তিকে পরিচালিত করে, স্বকীয়তা ও মৌলিকতার উন্মেষ ঘটিয়ে শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তরে সে বিচরণ করতে পারে। এভাবে মানুষ হয়ে ওঠে সুশিক্ষিত। যােগ্যতার দ্বারাই সে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে। তাই দেখা যায়, প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা মুখ্য নয়। কেননা পৃথিবীতে অনেক সুশিক্ষিত ব্যক্তি আছে যারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গণ্ডি অতিক্রম করেনি। শিক্ষার মাধ্যমে আত্মার বিকাশ ঘটে। আর এ শিক্ষা অর্জনের জন্যে চাই সাধনা।
মন্তব্য : সুশিক্ষিত ব্যক্তি তিনিই যার মন কুসংস্কারমুক্ত ও মুক্তবুদ্ধির আলােকে উদ্ভাসিত। যিনি পরিশীলিত রুচিবােধে নম্র ও উদার তাকেই সুশিক্ষিত বলা চলে। এ সুশিক্ষা তার স্বীয় সাধনা দ্বারা অর্জিত। এ শ্রেণির মানুষই আলােকিত মানুষ।
Post a Comment