মূলভাব : কোনাে মানুষের মহৎ উদার ও চরিত্রবান হওয়া অন্যের ভালাে বা মন্দ হওয়ার ওপর নির্ভর করে না। উত্তম স্বভাবের মানুষ কখনাে অধম ও হীন স্বভাবের মানুষের ন্যায় আচরণ করেন না।
সম্প্রসারিত ভাব : সমাজের সব মানুষ এক রকমের হয় না। কেউ ভালাে, কেউ মন্দ। কিছু মানুষ আছে যারা সমাজ ও মানুষের কল্যাণে। কাজ করে অন্যায়-অপকর্ম এবং অন্যের ক্ষতিসাধন করা থেকে বিরত থাকে। এ শ্রেণির মানুষ সমাজে উত্তম মানুষ হিসেবে গণ্য। আবার মানুষের মধ্যে যেমন রয়েছে সুপ্রবৃত্তি বা বিবেক-বুদ্ধি ও ঔচিত্যবােধের তাড়না তেমনি রয়েছে কুপ্রবৃত্তির প্ররােচনা। আর আছে ব্যক্তিস্বার্থের আকর্ষণ। এসব কারণে মানুষ পারস্পরিক স্নেহ-প্রীতি ও প্রেম ভালােবাসার কথা ভুলে গিয়ে হিংসা-বিদ্বেষ, লােভ-লালসা এবং নানা অন্যায় অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। এ শ্রেণির মানুষ সমাজে অধম মানুষ হিসেবে পরিগণিত। সমাজে এদের প্রভাবও কম নয়। অনেকেই এ শ্রেণির লােকদের অনুকরণ-অনুসরণ করে থাকে। কারণ তাদের ধারণা যে, পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই অসৎ। তাই তাদের সৎ হওয়ার চেষ্টা করা একেবারেই অর্থহীন। কিন্তু এ ধরনের ভাবনা একেবারেই অর্থহীন ও বােকামিপূর্ণ। কারণ মানুষ হিসেবে আমাদের ভালাে-মন্দ, কল্যাণ- অকল্যাণ, ন্যায়-অন্যায় ও উচিত-অনুচিতের পার্থক্য উপলব্ধি করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই আমাদের ভালােটাকেই গ্রহণ করতে হবে এবং মন্দটাকে বর্জন করতে হবে। অর্থাৎ অন্যরা অধম বলে আমাদেরও অধম হলে চলবে না। বিবেকের তাড়নায় তাড়িত হয়ে আমাদের উত্তম হওয়ার সাধনা করতে হবে। আমাদের স্মরণ রাখতে হবে যে, সমাজে অধম লােকের কোনাে স্থান নেই। সমাজ তাদের নিন্দা ও অবহেলার চোখে দেখে। অন্যদিকে, উত্তম লােক মানুষের শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালােবাসার পাত্র। এছাড়া সমাজে উত্তম মানুষরূপে বেঁচে থাকার মধ্যে একটা গৌরব ও আত্মতৃপ্তি রয়েছে।
মন্তব্য : মন্দ স্বভাবের মানুষ ব্যক্তির ও সমাজের অনিষ্ট চিন্তায় বিভাের থাকে। কিন্তু উত্তম স্বভাবের ব্যক্তির পক্ষে অনুরূপ আচরণ এবং চিন্তার প্রকাশ অপ্রার্থিত ও অনুচিত।
Post a Comment