মূলভাব : সাহিত্যের মাধ্যমে একটি জাতির সামগ্রিক পরিচয় বিধৃত হয়। তাই কোনাে জাতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে হলে, সে জাতির সাহিত্য পাঠ অত্যাবশ্যক।
সম্প্রসারিত ভাব : একটি জাতির চিন্তাচেতনা-ধ্যানধারণা সাহিত্যের মধ্যে বিধূত হয়। কবি, সাহিত্যিকরা প্রতিনিধি হিসেবে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা তাদের লেখনীর মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করে থাকেন। তাঁরা চারপাশের জীবনাচরণকে তাদের লেখার প্রধান উপজীব্য হিসেবে গ্রহণ করায় সাহিত্য আয়নার কাজ করে। আর তাতে জাতির সঠিক প্রতিবিম্ব দেখা যায়। সাহিত্যের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য সমাজের বৃহত্তর কল্যাণ ও গণমানুষের উন্নতি সাধন করা। জাতীয় ঐতিহ্য সাহিত্যের প্রধান উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। জাতির সমৃদ্ধির মূল্যায়ন সাহিত্যের সমৃদ্ধির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। কেননা প্রত্যেক জাতির সাহিত্য পাঠ করে সে | জাতির রীতি-নীতি আচার-অনুষ্ঠান প্রভৃতি সম্পর্কে ভালােভাবে জানা যায়। | সাহিত্য কেবলই কোনাে জাতির পরিচায়ক নয় বরং এর মাধ্যমে মানুষের মন | কুসংস্কারমুক্ত হয়ে সৌন্দর্যবােধে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। জাতীয় জীবনে এত বেশি অবদানের জন্যই সাহিত্যকে আয়নার সাথে তুলনা করা হয়েছে। কালের গর্ভে কোন জাতি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, তার চিহ্ন নিশ্চিহ্ন হয়ে | যেতে পারে। কিন্তু তার সাহিত্য থাকে চির অম্লান। কালের ধুলােয় সাহিত্য মলিন হয়ে যায় না বরং জাতির কার্যমহিমা ও ইতিহাস যুগে যুগে আমাদের সামনে মূর্ত করে তােলে।
মন্তব্য : সাহিত্যে জাতীয় চিন্তাধারা ও বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। মানুষের ভেতরের সৌন্দর্যকে প্রকাশ ও সুস্থ চিন্তার উন্মেষ ঘটানােই সাহিত্যের উদ্দেশ্য। তাই সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে যত্নশীল হওয়া আবশ্যক। এ কারণেই সাহিত্য হচ্ছে জাতির মননের আয়না।
Post a Comment