সম্প্রসারিত -ভাব : মানুষের অভাবের কোন শেষ নেই। একটি অভাব পূরণের পর আর একটি অভাবের জন্ম হয়। মানুষের জীবনধারণের জন্য অনেক কিছু প্রয়ােজন হয়। কিন্তু তার সবকিছু সব সময় করায়ত্ত করা সম্ভব নয়। এর ফলে অভাবের সৃষ্টি হয়। মানুষের অভাব সাধারণত দু'ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত মৌলিক অভাব, দ্বিতীয়ত মৌলিক বস্তুর বাইরে মানুষ অন্যান্য বিলাস দ্রব্যের জন্য যে অভাব বােধ করে। মৌলিক অভাব হচ্ছে জীবনধারণের জন্য যা অপরিহার্য। বেিচে থাকতে হলে এগুলাে খুবই প্রয়ােজন। দ্বিতীয় অভাবটি হচ্ছে আরাম-আনন্দে জীবন উপভােগ করার জন্য প্রয়ােজন। আর এ অভাবগুলাে মানুষ যখন পূরণ করতে পারে না তখনই দুঃখ আসে। এ জগতে যার চাহিদার পরিমাণ বেশি, সে যা পেয়েছে তা নিয়ে তৃপ্ত নয়, তার মধ্যে দুঃখও বেশি। না পাবার বেদনা তাকে সব সময় পীড়িত করে, তাকে ঠেলে দেয় দুঃখের সাগরে। অপরপক্ষে যার চাহিদা কম তার দুঃখও কম। কারণ, না পাবার বেদনায় তাকে জর্জরিত হতে হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এক ব্যক্তির জুতা না থাকার কারণে তার মনে দুঃখবােধ জাগে। এমন সময় এক পা নেই এমন মানুষকে দেখে জুতাকে সে অপ্রয়ােজনীয় বস্তু হিসেবে মনে করে তার মন থেকে জুতার চাহিদা অপসারণ করল। এরপর সে দেখতে পেল জুতার জন্য তার মনে আর দুঃখ নেই। এভাবে অভাব যত কমানাে যায়, দুঃখও তত কম হয়। পৃথিবীতে যত মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে বেশি অভাববােধ ছিল না। সেজন্য তারা লাভ করেছেন অনাবিল শান্তি। দুঃখের সাগরে তাদের ভাসতে হয়নি। কোন মানুষ তার অভাব পূরণে ব্যর্থ হলে মনে দুঃখবােধ জাগ্রত হয়। তাই অভাব যত কম হয় ততই ভালাে। চাহিদাবােধ কম হলে আমাদের জীবনে দুঃখও কম আসবে।
ভাবসম্প্রসারণ অভাব অল্প হলে দুঃখও অল্প হয়ে থাকে
Sraboni
... min to read
Listen
মূলভাব : দুঃখ আসে অভাবের ফলে। অভাব ও দুঃখ আনুপাতিক হারে বাড়ে ও কমে। অর্থাৎ অভাব যদি বেশি হয় তাহলে দুঃখও বেশি হবে, আবার অভাব কম হলে দুঃখও কম হবে।
Post a Comment