ঢাকা ১২১৭
১৫ই জানুয়ারি, ২০১৭
প্রিয় সৌরভ,
শুভেচ্ছা নিও। আজ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তােমাকে লিখছি। চোখের সামনেই ঘটে গেল প্রিয় বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে বন্ধু রায়হান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আমার চোখের সামনে। অথচ রায়হানের অস্তিত্ব বার বারই আমাকে ব্যথিত করছে, কিছুতেই ওর স্মৃতি ভুলতে পারছি না। সেদিন বিদ্যালয় ছুটি হওয়া মাত্র আমরা ছুটোছুটি করে এসে বাসে উঠি। জানােইতাে রাজধানী শহরের প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রচুর ছাত্র। মুহূর্তে শত শত ছাত্রের আগমনে সম্পূর্ণ বাস ভর্তি হয়ে গেল। ড্রাইভার তবুও বাস ছাড়ল না। যখন বাসটিতে তিল ধারণের আর জায়গা নেই; অনেক ছাত্র বাসের দরজায় হ্যান্ডেল ধরে ঝুলছে তখন ড্রাইভার বাস ছাড়ল। এ সময় কোথা থেকে দৌড়ে ছুটে এল রায়হান। এক লাফে হ্যান্ডেল ধরে চলন্ত বাসে উঠতে চাইল । কিন্তু না, পারল না। চোখের পলকে পা ফসকে সে চলে গেল বাসের চাকার নিচে। সঙ্গে সঙ্গে এক মর্মান্তিক আর্তনাদ। বাস ভর্তি ছাত্রছাত্রীর গগনবিদারী চিতকার চারদিক প্রকম্পিত করে তুলল । ড্রাইভার মুহূর্তে হাওয়া হয়ে গেল। পুলিশ এসে রায়হানের রক্তাক্ত লাশ তুলে নিয়ে গেল হাসপাতালে। ইতোপূর্বে আমিও রায়হানের মতাে চলন্ত বাসের হ্যান্ডেল ধরে উঠেছি। সামান্য ভুলে এ রকম মর্মান্তিক মৃত্যুর আশঙ্কা আমি কখনাে কল্পনাও করতে পারিনি। রায়হানের মৃত্যু 1. আমার জীবনে চিরস্মরণীয় কষ্টদায়ক অম্নান এক ঘটনা। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি আর কখনাে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনাে যানবাহনে চড়ব না। ধীরস্থিরভাবে যানবাহনে চলাফেরা করাটাই নিরাপদ। আমার অনুরােধ, তুমিও কখনাে যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে উঠবে না।
তােমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম জানাবে ও সময় পেলে আমাকে চিঠি লিখবে।
ইতি
তােমার শুভাকাক্ষি
মেঘনা
* [এখানে প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানাসহ খাম আঁকতে হবে]
Post a Comment