১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
প্রিয় রােকন,
পত্রের শুরুতে রইল তােমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। প্রায় ছয় মাস হলাে তােমার কোনাে খবর পাইনি। হঠাৎ করেই গতকাল তােমার একটি চিঠি পেলাম। চিঠি থেকে জানতে পারি তােমার মনের অবস্থা। কয়েকদিন ধরে তােমার কথাও আমার খুব মনে পড়ছে। চিঠিতে তুমি জানতে চেয়েছ কীভাবে নবান্ন উৎসব পালিত হয়? আমি তােমাকে নবান্ন উৎসব সম্পর্কে কিছু লিখছি। নবান্ন আমাদের দেশের শস্যভিত্তিক একটি লােক উৎসব। কৃষিপ্রধান সভ্যতায় প্রধান শস্য সংগ্রহকে কেন্দ্র করে যেকোনাে ঋতুতে এই উৎসব পালিত হয়। এটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বাংলার কৃষক সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। এটি সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান কাটার পর সেই ধানের চালে প্রথম রান্না করা ভাত, পিঠা-পায়েস প্রভৃতি বানানাের উৎসব। এই উৎসবে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের আগমন ঘটে। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় চালের গুঁড়ি কোটা, শাঁখ বাজানাে আয়ােজন। পাড়ায় পাড়ায় কোনাে কোনাে বাড়িতে পালাগান, জারিগান ও কীর্তনের আসরও বসে। নবান্ন উপলক্ষ্যে কৃষকরা নতুন জামাকাপড়ও কেনে। নবান্ন উৎসব একসময় একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব ছিল। তবে আজকাল আর গ্রামগঞ্জে আগের মতাে করে নবান্ন উদযাপিত হয় না। এখন রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা শহরে প্রতিবছর পহেলা অগ্রহায়ণে আনুষ্ঠানিকভাবে নবান্ন উৎসব উদযাপিত হয় ।
পত্রের শেষে তােমার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। তােমার মা-বাবাকে আমার সালাম দিও। সময় পেলে আমাকে অবশ্যই চিঠি লিখবে ।
ইতি-
তােমার বন্ধু
খােকন
Post a Comment