১৫ই অক্টোবর, ২০১৭
প্রিয় কুশল,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। আশা করি তােমার আব্বা, আম্মা ও ভাই- বােনদেরকে নিয়ে ভালাে আছ। গতকাল তােমার একটি চিঠি পেয়ে। তােমার বর্তমান অবস্থা বিস্তারিত জানতে পারলাম।
গত চিঠিতে তােমাকে লিখেছিলাম শরৎকালীন ছুটিতে ভাই-ভাবির সঙ্গে বেড়াতে যাব। কিন্তু বেড়ানাের জায়গাটি যে এত চমৎকার হবে কখনাে ভাবতে পারিনি। গতকাল আমরা ইতিহাস প্রসিদ্ধ সােনারগাঁও দেখে এসেছি। ছােটবেলায় বই-পুস্তকে পড়েছি বাংলার প্রখ্যাত বার ভূঁইয়াদের কাহিনি। তাদেরই একজন স্বনামধন্য স্বাধীনচেতা বীর ছিলেন ঈশা খাঁ। তাঁরই অমর কীর্তিময় রাজধানী সােনারগাঁও। এর প্রাকৃতিক শােভা, প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনের বিমােহিত চিত্র চিঠিতে লিখে তােমাকে আমি ঠিক বােঝাতে পারব কিনা জানি না। তবুও কিছুটা হলেও সেই সৌন্দর্যের চিত্র তুলে ধরতে চেষ্টা করব।
সকাল সাতটায় খাওয়া-দাওয়া সেরে আমরা সােনারগাঁও-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। সকাল নটায় সেখানে পৌছলাম। রাস্তার পাশে ভগ্নপ্রায় বিরাট দ্বিতল ইমারত, সামনে মস্ত পুকুরের পাশে গাছের সারি। শান বাঁধানাে ঘাটে ঘােড়ার পিঠে বীরযােদ্ধার পাথরের খােদাই করা গবিত প্রতিমূর্তি স্মরণ করিয়ে দেয় বাংলার অবলুপ্ত শৌর্য-বীর্যের কথা। আর একটু এগিয়ে যেতেই দেখলাম শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের প্রচেষ্টায় নির্মিত বাংলার লােকশিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘর। এখান থেকে শুরু ঈশা খাঁর রাজধানীর মূল ভবন। রাস্তার দু পাশে রয়েছে অনেক পুরােনাে অট্টালিকা। প্রতিটি অট্টালিকায় রয়েছে প্রাচীন যুগের স্থাপত্য নিদর্শন। বাংলাদেশ সরকার পুরাকীর্তি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে সােনারগাঁও-এর ধ্বংসপ্রায় প্রাসাদসমূহকে সংস্কার ও সংরক্ষণের আওতায় এনেছেন। উত্থান-পতনের ধারা বেয়ে আজকের ধ্বংসপ্রায় সােনারগাঁও হয়তাে একদিন বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু সােনারগাঁও-এর স্মৃতি আমার মানসপটে চিরদিনই থাকবে অমলিন। তুমিও সময় পেলে দেখে এসাে বাংলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান সােনারগাঁও।
আমি ভালাে আছি। তােমার পড়াশােনা কেমন চলছে জানাবে। তােমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম জানাবে।
ইতি-
তােমার প্রীতিমুগ্ধ
অনন্ত
* [এখানে প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানাসহ খাম আঁকতে হবে]
Post a Comment