মূলভাব: নীতি ও নৈতিকতাবিরােধী কাজই হচ্ছে দুর্নীতি। এর প্রভাবে একটি জাতির স্বপ্ন ও সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। শিক্ষা ও মূল্যবােধের যথাযথ। সমন্বয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট মনুষ্যত্ববােধ মানুষকে দান করেছে এ মহিমান্বিত মর্যাদা। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, মানুষের এ শ্রেষ্ঠত্ব আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। সততা ও সুনীতির প্রশ্নে মনুষ্য-সমাজের বিশিষ্টতা আজ তর্কাতীত নয়। কোনাে জাতির সামগ্রিক জীবনাচরণে সততা ও মূল্যবােধের অবক্ষয় ঘটলে জাতীয় জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়ের অশনি সংকেত। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র আক্রান্ত হয় দুর্নীতির রাহুগ্রাসে। সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে জাতীয় অস্তিত্ব। সম্প্রতি আমাদের দেশে মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে দুর্নীতি নামক ব্যাধিটি। দুর্নীতি একটা জাতীয় সমস্যা। মুষ্টিমেয় মানুষ ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্যে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকে। কালক্রমে এটা অনিবার্য পথ ধরে গ্রাস করে শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে গােটা সমাজকে। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলেই অবলম্বন করতে থাকে এ অসুদপায়টি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অর্থনীতি, ব্যাহত হয় জাতীয় উৎপাদন। এগুলাে দুর্নীতির প্রত্যক্ষ ফলাফল। সচেতনভাবে লক্ষ করলে দেখা যায়, দুর্নীতির রাষ্ট্রীয়করণের সুদূরপ্রসারী ফলাফল খুবই ভয়াবহ দুর্নীতির ফলে জাতীয় উন্নতির পথ রুদ্ধ হয়ে জাতি হয়ে পড়ে হতাশাগ্রস্ত যা তাদের মধ্যে পাশবিকতার জন্ম দিয়ে থাকে। দুর্নীতির এ নেতিবাচক দিকটার সবচেয়ে বড় শিকার হয় যুবসম্প্রদায়। পরিশীলিত চিন্তাবােধের অভাবে সাফল্যলাভের জন্যে তারা সহজেই অশুভ ও ধ্বংসের পথ বেছে নেয়। এভাবে জাতীয় জীবনে সৃষ্টি হয় অস্তিত্বের সংকট।
মন্তব্য: দুর্নীতিগ্রস্ত জাতি কখনও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য লাভ করতে পারে না। আমাদের বিশেষত দেশের শিক্ষিত সমাজকে এটা উপলব্ধি করতে - হবে। সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর সমাজ গড়তে হলে জাতীয় জীবন থেকে দুনীতি অপসারণ করা অতীব জরুরি।
Post a Comment