প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক
সম্প্রসারিত-ভাব : এ জগতে কোন কিছুই আকস্মিকতায় সৃষ্টি নয়। একদিন আমাদের পূর্বপুরুষেরা বনে-জঙ্গলে বাস করত। চকমকি দিয়ে আগুন জ্বালাত। বৈজ্ঞানিকের চমকপ্রদ উদ্ভাবন তখন অজ্ঞাত ছিল। মানুষের দৈনন্দিন কাজের প্রয়ােজনে সভ্যতার ক্রমবিকাশ ঘটেছে। তার চিন্তা-ভাবনা বেড়েছে। মানুষের প্রয়ােজনীয়তার কথা ভেবে বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কার বা উদ্ভাবন ঘটেছে। মানুষ এক এক সময় এক এক জিনিসের অভাবের কথা বুঝতে পেরেছে। প্রয়ােজনের কথা গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করেছে। অন্ধকার দূর করা প্রয়ােজন তাই বিদ্যুৎ উদ্ভাবন করেছে। যাতায়াতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা ছিল না, বাহন ছিল না। রাস্তা-ঘাট তৈরি করেছে, স্টীমার ইঞ্জিন, রেলগাড়ি, মােটরগাড়ি, এরােপ্লেন এবং আরও অনেক যন্ত্রযান উদ্ভাবন করেছে। দূরাঞ্চলের মানুষের কথা শােনা দরকার ? পর্দায় ছবি দেখা দরকার, তাই উদ্ভাবন হল চলচ্চিত্র, টেলিফোন, টেলিস্কোপ, টেলিগ্রাফ, টেলিভিশন, ভি.সি. আর. ইত্যাদি। প্রয়ােজনীয়তা না থাকলে এগুলাে উদ্ভাবনের কথা চিন্তাও করা যেত না। আলাে জ্বালানাে দরকার। তাই দেয়াশলাই, লাইটার উদ্ভাবন করেছে। আবার রােগ-শােক, জরা-ব্যাধিকে দূরে নিক্ষেপ করার জন্য X-Ray, আলট্রাসনােগ্রাফীর উদ্ভাবন করেছে। নানা দূরারােগ্য ব্যাধির ঔষধ আবিষ্কার করার প্রয়ােজনের কথাও তার মনে হয়েছে। সে আবিষ্কার করেছে পেনিসিলিন, ক্লোরােমাইসিন ইত্যাদি। এভাবে একটার পর একটার প্রয়োেজনীয়তাই মানুষের আজকের সুখপ্রদ জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে। অতএব, প্রয়ােজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক। প্রয়ােজনই মানুষের চলার পথকে সহজ করছে। অর্থাৎ প্রয়ােজনই উদ্ভাবকের জনক।
Post a Comment