সম্প্রসারিত-ভাব : পৃথিবীতে মানুষের প্রকৃত বিচারে তার জন্ম ও পরিচয় তেমন গুরুত্ব বহন করে না। বরং কর্ম-অবদানের মাধ্যমেই মানুষ পায় মর্যাদার আসন, হয় বরণীয় ও স্মরণীয়। সমাজে একদল লােক আছেন যারা বংশ আভিজাত্যে নিজেদের সভ্রান্ত মনে করেন। তারা বংশ মর্যাদার অজুহাতে সমাজে বিশেষ মর্যাদা দাবি করেন। কিন্তু তাদের এ প্রয়াস বাস্তবতা বিবর্জিত ও হাস্যকর। সমাজের নিচুতলায় জন্ম নিয়েও মানুষ কর্ম ও অবদানে বড় হতে পারে। মানব সমাজের ইতিহাসে এ রকম উদাহরণ অজস্র। পদ্মফুলের সৌন্দর্যই বড়। পঙ্কে জন্মেছে বলে তাকে হেয় গণ্য করা হয় না। তেমনি মানুষের কর্মের সাফল্যই বড়, জন্ম ও পরিচয়ে মানুষের বিচার হীনম্মন্যতারই পরিচায়ক। বস্তুত প্রকৃতির রাজ্যে মানুষে মানুষে কোন ভেদ নেই। একদল মানুষ মানুষের উপর আধিপত্য কায়েমের জন্য সমাজে বড়, ছােট, ধনী, দরিদ্র ইত্যাদি ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয় ব্যবধান রচনা করেছে মানুষই। ফলে সমাজে মানুষে মানুষে আপাতদৃষ্টে ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়েছে। তাই যে কোন পেশা, যে কোন কাজ মানুষ করুক না কেন তা সমাজে গুরুত্বহীন নয়। তাকে অপ্রয়ােজনীয় ও অবজ্ঞেয় করা সুস্থতার পরিচায়ক নয়। মানুষ যেখানেই জন্মাক, যে কাজই করুক, সে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে কি না সেটাই বিবেচ্য। মানুষের কল্যাণে, সমাজের অগ্রগতিতে সে যতটা অবদান রাখে তার ভিত্তিতেই তাকে মূল্যায়ন করা হয়। সে অনুযায়ীই তাকে সমাজে স্বীকৃতি দিতে হয়। বংশ পরিচয়ের অজুহাতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সমপদ, ক্ষমতা ও দম্ডের শক্তিতে মানুষের উপর জবরদস্তি করে সমাজে মর্যাদার আসন লাভ করা যায় না। তাই জন্ম ও পরিচয়ের উর্ধ্বে আপন কর্ম পরিচয় তুলে ধরাই হওয়া উচিত মানুষের জীবন ব্রত। তাহলেই সুকর্মের মাধ্যমে । মানুষ গৌরব ও মর্যাদার আসনে আসীন হতে পারে।
ভাবসম্প্রসারণ জন্ম হক যথা তথা কর্ম যােক ভালাে।
Sraboni
... min to read
Listen
মূলভাব : আপন জন্মের ব্যাপারে মানুষের নিজের কোন ভূমিকা থাকে না। উচু বা নিচু, ধনী বা দরিদ্র পরিবারে তার জন্য হওয়াটা তার ইচ্ছা বা কর্মের উপর নির্ভর করে না। কিন্তু কর্মজীবনে তার ভূমিকা ও অবদানের দায় তার নিজের উপর বর্তায়।
Post a Comment