সম্প্রসারিত ভাব: ফুলের পাপড়ি ছুঁয়ে উড়ে বেড়ায় যে প্রজাপতি, সে একসময় ডানা গুটিয়ে নিশ্চল হয়ে বসে থাকে। অন্তহীন নীলিমায় অবাধ সঞ্চরমান বিহঙ্গ নেমে আসে মাটির বুকে। যে মানুষটি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে গাইতি চালিয়ে পাথর ভাঙে, সেও হাতিয়ার ফেলে দু দণ্ড জিরােয় এ যে ক্ষণিক বিরতি, এ যে এতটুকু বিশ্রাম, এ তাে শুধু অবসাদের ক্লান্তি দূর করা নয়, নতুন কর্ম প্রেরণায়, নব, উদ্যমে উজ্জীবিত হয়ে পরবর্তী কাজের জন্যে প্রস্তুত হওয়া। কাজের ফাঁকে বিরাম বা বিশ্রামের সময়টুকুই হলাে অবকাশ। বিশ্রাম কাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি, পরিশ্রম জীবনে আনে সমৃদ্ধি। আর বিশ্রাম আনে কাজে উদ্যম, শক্তি ও প্রেরণা। পরিশ্রমের পর শ্রান্ত ও ক্লান্ত দেহকে সুস্থ করে হৃত উদ্যম ফিরিয়ে আনার জন্যে, যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন, তেমনই বিশ্রামের পর দেহের কর্মস্পৃহাকে সচল সজীব রাখার জন্যে নিয়মিত শ্রমেরও প্রয়ােজন। দেহের পক্ষে একটানা পরিশ্রম যেমন ক্ষতিকর, তেমনই একটানা বিশ্রামও সুখকর নয়। একটানা বিশ্রাম জীবনকে করে তােলে অলস, অচল ও কর্মবিমুখ । পক্ষান্তরে একটানা পরিশ্রমের ফলে দেহে-মনে ভর করে অবসাদ, লুপ্ত হয় দেহের কর্মক্ষমতা। বিশ্রামের প্রয়ােজনেই বিধাতা দিনের কর্মময় জীবনের পর রাত্রি দান করেছেন। চোখের পাতা যেমন চোখের জন্যে অপরিহার্য অঙ্গ, তেমনই বিশ্রামও পরিশ্রমের জন্যে অপরিহার্য।
মন্তব্য: কাজ ও বিশ্রাম পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু একটানা কাজ অথবা একনাগারে বিশ্রাম কোনােটাই জীবনের জন্যে কল্যাণকর নয়। তাই কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম, বিশ্রামের পাশাপাশি কাজ অপরিহার্য।
Post a Comment