সম্প্রসারিত-ভাব : পৃথিবীতে তরুলতা ও পশুপাখির মত মানুষও প্রকতির সৃষ্টি। কিন্তু প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে মানুষ একেবারে আলাদা। জন্মসূত্রে তরুলতা ও পশুপাখি সহজাত স্বভাব বৈশিষ্ট্য পায়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাদের জন্মগত স্বভাব, প্রকৃতি প্রদত্ত গুণাবলি ও প্রকৃতি নির্ভর বৈশিষ্ট্য অব্যাহত থাকে। কিন্তু জন্মগত সহজাত বৈশিষ্ট্যে মানুষের পরিচয় সীমিত নয়। অসহায় অবস্থায় জন্ম নিয়েও মানুষ সচেষ্ট সাধনায় শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে হয়ে উঠে পরিপূর্ণ মানুষ। এজন্য সামাজিক মানুষ হিসেবে মানুষকে সমাজ জীবন থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। তরুলতা বা পশুপাখি তার সহজাত গুণের বাইরে নতুন জ্ঞান সৃষ্ট বা তা আয়ত্ত করার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু মানুষ তার সহজাত ক্ষমতার উপর ভিত্তি করেই সহজাত ক্ষমতার বাইরে নিত্যনতুন জ্ঞান আহরণ করতে পারে, সৃষ্টি করতে পারে নিত্যনতুন সম্পদ। এভাবে জ্ঞান - বিজ্ঞান ও শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানুষ গড়ে তুলেছে নিজস্ব সভ্যতা এবং জগৎ বিকাশের নিয়মগুলাে আয়ত্ত করে নি কিংবা জন্মসূত্রেও সেই করে সৃষ্টি জগতে বিস্তার করেছে আপন আধিপত্য। কিন্তু মানুষ এ ক্ষমতা একদিনে অর্জন করে নি অভিজ্ঞতা কেউ লাভ করতে পারে না। এজন্য তাকে নিরন্তর সাধনায় নানা বিদ্যা শিখতে হয়, জ্ঞান- বিজ্ঞানের চর্চা করতে হয়, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির নানা দিক আয়ত্ত করতে হয়। চেষ্টা ও সাধনা ছাড়া এসব অর্জন করা যায় না। তাই মানুষ হয়ে উঠার জন্য চাই নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা ও সাধনা। বিশ্বজগতের সমস্ত সৃষ্টির সাথে এখানেই মানুষের পার্থক্য ও স্বাতন্ত্র্য।
ভাবসম্প্রসারণ তরুলতা সহজেই তরুলতা, পশুপাখি সহজেই পশুপাখি, কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় তবে মানুষ।
Sraboni
... min to read
Listen
মূলভাব : মানুষের জীবন সার্থকতা পায় মনুষ্যত্ব অর্জনের সাধনায় সফলতা অর্জনের মাধ্যমে। মানবিক গুণাবলি মানুষের সহজাত অর্জন নয়। শিক্ষা ও সাধনার মাধ্যমে বিবেক, বুদ্ধি ও মনন শক্তি অর্জন করে মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠে।
Post a Comment