সম্প্রসারিত-ভাব : বিশ্বের মানবসমাজ বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত। এ শ্ৰেণীবিভক্তি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। ধর্ম, বর্ণ, পরিবেশ, আর্থ-সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ প্রভাব এ শ্রেণীভেদ, সৃষ্টি করে থাকে। মুসলমান-হিন্দু, আরব-ইহুদি, সাদা-কালাে, আর্য-অনার্ষ, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ইত্যাদি বর্ণগত ও জাতিগত পার্থক্য ও ভেদাভেদ বিদ্যমান। মাবসমাজের উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় এ জাতিভেদ, শ্রেণীভেদ ঘৃণা ও বিরােধ। উচ্চ শ্রেণী শিক্ষা, সংস্কৃতি, আর্থিক সুযােগ-সুবিধা, সামাজিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তি প্রভৃতি দিক থেকে তথাকথিত নিম্ন শ্রেণীকে বঞ্চিত করতে চায়। এর ফলে মানবসমাজের একটা বৃহৎ অংশ মনুষ্যত্বহীন স্তরে অবমাননায়, লাঞ্ছনায় ও দারিদ্র্যে মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হয়। তা সমগ্র সমাজের ও দেশের উন্নতি এবং মানবকল্যাণের পরিপন্থী। দেশের বৃহত্তর জনসংখ্যা যেখানে অশিক্ষিার অন্ধকার ও হেয়তায় কুসংস্কারে এবং অমানবােচিত জীবনযাত্রায় অবনমিত, সেখানে স্বল্পসংখ্যক উচ্চবিত্তের সংস্কৃতি-উজ্জ্বল জীবনেও তার মসীচিহ্ন পড়তে বাধ্য। কারণ, সমাজ একটা যৌথ-জীবনধারা; একের জীবনচর্চা ও ধারা অপরকে সেখানে প্রভাবিত করবেই। তাছাড়া বঞ্চিত, অবহেলিত শ্রেণীর মধ্যে ধূমায়িত অসন্তোষ অনেক সময় বিদ্রোহ-বিপ্লবের রূপ গ্রহণ করে থাকে। তাতে সমাজ বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পৃথিবীর বহু প্রাচীন সভ্যতা এ কারণে বিনষ্ট হয়েছে। জন্ম লগ্ন থেকেই মানুষ স্বাধীন। তাকে নিকৃষ্ট ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য বেশিদিন পরাধীনতায় বেঁধে রাখা যায় না। তাৎক্ষণিকতাবে বা দেরিতে যেভাবেই হােক সময় সকল সমস্যার সমাধান করে ছাড়ে।
যারে তুমি নিচে ফেল, সে তোমারে বাঁধিবে যে নিচে পশ্চাতে রেছে যারে, সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে ভাবসম্প্রসারণ
Sraboni
... min to read
Listen
Post a Comment