সম্প্রসারিত ভাব: সুন্দর ও উচ্চবংশ মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠত্ব বহন করে না। প্রথাগত সমাজ ব্যবস্থায় বংশ পরিচয়ের একটি মূল্য আছে বটে, তবে এ বংশমর্যাদা মানুষকে প্রকৃত মর্যাদাবান করে গড়ে তুলতে পারে না। গােড়া সামন্তবাদী সমাজব্যবস্থায় আশরাফ-আতরাফ এ দু শ্রেণির পরিচয় পাওয়া যেত এবং তাদের মধ্যে সামাজিক বৈষম্য প্রকট ছিল। কিন্তু সভ্যতার এ উৎকর্ষের কালে সামাজিক এ বিশ্বাস মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখন সমাজে মানুষের বংশ-পরিচয় তেমন কোনাে কৃতিত্ব বহন করছে না। মানুষ তার মহৎ কর্মের দ্বারা বংশগত গ্লানি দূর করতে সক্ষম। উচ্চবংশে জন্মগ্রহণকারী যেকোনাে ব্যক্তি যদি পাপাচারে লিপ্ত হয়, অপকর্মের দোষে দুষ্ট হয়, তবে সে নিশ্চিতভাবে সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালােবাসা হারাবে। মানুষ তাকে সমাজের উচ্চ আসন থেকে ছুড়ে মারবে নােংরা আবর্জনায়। এক্ষেত্রে বংশ পরিচয় তার সম্মানকে রক্ষা করতে পারবে না। অপরপক্ষে কেউ যদি নিম্নবংশে জন্মগ্রহণ করেও তাঁর মহৎ কর্ম ও চারিত্রিক আদর্শের হিরণ্ময় দীপ্তিতে হয়ে ওঠেন অনন্য, উজ্জ্বল; তবে নিঃসন্দেহে তিনি অর্জন করবেন সমাজের সাধারণ মানুষের অকুষ্ঠ শ্রদ্ধা ও ভালােবাসা। আধুনিক সমাজে মানুষের কাছে বংশ নয়, কর্মই মূল বিবেচ্য বিষয় ।
মন্তব্য: মানুষের প্রকৃত কৌলিন্য তার বংশমর্যাদার ওপর নির্ভর করে না বরং এটা নির্ভর করে তার সৎকর্মের ওপর । সাধু ও মহৎ ব্যক্তিগণ পৃথিবীতে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন তাদের বংশপরিচয়ে নয়; বরং পুণ্য-কর্ম সম্পাদনের ফলে।
1 comment