সম্প্রসারিত-ভাব : দু:খ-বিপদাপদের মধ্য দিয়ে মানুষের যাত্রা শুরু হয়। তাকে সংগ্রাম করতে হয় নানা প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে। শীত-তাপ, রােগ-শােক, দু:খ-দারিদ্র এ সবের চাপে মানব পর্যুদস্ত হয়, চোখে বিভীষিকা দেখে। কিন্তু এ সবের জন্য চাই শক্তি, অধ্যবসায় ও সহিষ্ণুতা। দু:খ-বিপদ জয় করতে পারাটাই মনুষ্যত্ব। যুদ্ধে জয়-পরাজয় আছেই। কিন্তু যে মানুষ পরাজয়কে অম্লানবদনে মাথা পেতে নিয়ে পরবর্তী বিজয়ের জন্য ব্রতী হয় এবং বিজয় অর্জন করতে পারে সেই-ই যথার্থ বীর। আসলে সহিষ্ণুতা সকল শক্তির উৎস। আমরা কটল্যাণ্ডের বীর সেনাপতি রবার্ট ব্রুসের কথা জানি। বার বার পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও ব্রুস ধৈর্য ধারণ করেছিলেন এবং সহিষ্ণুতা গুণে তিনি কটল্যাণ্ড জয় করেছিলেন। জীবনে যে যত উন্নতি করতে চায় তাকে তত সহিষ্ণু হতে হবে। সহিষ্ণুতা যার নেই সে বড় হতে পারে না। তার দ্বারা বড় কাজ সম্ভবপর নয়। যার চরিত্রে হিমাচলের মতাে ধৈর্য ও তিতিক্ষা আছে তিনিই অক্ষয় কীর্তি স্থাপন করতে পারেন। ত্যাগ আর ধৈর্যই মানব জীবনে সুখ শান্তি লাভের পূর্বশর্ত।
'আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবণী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।'
এ উপলব্ধিকে জগতে ধারণ করেছেন বিভিন্ন ধর্মের মহান পুরুষরা। হযরত মুহাম্মদ (স), যীশু খ্রিস্ট, বুদ্ধদেব প্রমুখ ধর্ম প্রবক্তারা এ উপলদ্ধিকেই লালন করেছেন এবং লালন করতে বলেছেন তাদের অনুসারীদের। মানুষের সব সৃষ্টিকর্ম ও সম্পদ বৃহৎ জগতের কাছে নিয়ােজিত করতে পারলেই সেগুলাে স্বার্থক হয়। মানুষের জীবনও সফলতায় ভরে উঠে।
Post a Comment