সম্প্রসারিত-ভাব : এ জগৎ স্থিতিশীল নয়। অনন্তকাল ধরে এটি চলবে। মহাকালের গতি যেদিন থেমে যাবে সেদিন ঘটবে মহাপ্রলয়। এ অনন্ত যাত্রা-পথে আমাদের জীবনও তাই এবং ভবিষ্যতেও গতিশীল। গতিশীলতার মধ্যেই ফুটে ওঠে জীবনের লক্ষণ। সংগ্রামমুখর আমাদের জীবন। জীবনে বেঁচে থাকতে হলে কাজের প্রয়ােজন। কর্মই মানুষকে গতিশীল রাখে। কুঁড়ে এবং গোড়া ব্যক্তিরা সমাজে জীবত অবস্থায় পড়ে থাকে। কারণ তাদের আত্মার মৃত্যু অনেক আগেই ঘটে যায়। স্রোতমিনী নদীর জলে কারণে সেখানে শেওলা জমতে পারে না। কিন্তু স্রোতহীন নদী শেওলায় ভরে যায় এবং এতে জল নষ্ট হয়ে পানের অযােগ্য হয়। তেমনি কর্মময় জীবনই হচ্ছে জীবন। কর্মহীন জীবন মৃত্যুর নামান্তর। এ পৃথিবী হচ্ছে এক বিরাট রণক্ষেত্র। সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে এখানে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয়। ডারউইন বলেছেন, 'প্রকৃতির জগতে যে অধিকতর যােগ্য সেই টিকে থাকবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে বাঁচতে হলে, টিকে থাকতে হলে সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হবে। দৃষ্টি রাখতে হবে সামনের দিকে, পেছনের দিকে নয়। চিন্তা, চেতনায় যারা অগ্রসর তারাই এগিয়ে যায় প্রগতির পথে। তারাই আনেন বিবর্তন, সৃষ্টি করে নব নব সভ্যতা। মানুষের কল্যাণের জন্য তারাই আবিষ্কার করে নতুন নতুন উপাদান। আর যারা কর্মহীন কুঁড়ে তারা জড় পদার্থের মত অচল। এরা কোন উপকারেতাে আসেই না বরং অপরের চলার গতিকে ব্যাহত করে। তাই এরা যেমন উপেক্ষিত তেমনি অবাঞ্চিত। কর্মহীন জীবন কোন মানুষেরই কাম্য হতে পারে না। এতে করে মানুষ অচল ও অসাড় হয়ে পড়ে। কাজই মানুষের জীবনে আনবে গতি, যে গতিতে মানুষ জীবনের অর্থ খুঁজে পাবে।
ভাবসম্প্রসারণ গতিই জীবন, স্থিতিতে মৃত্যু।
Sraboni
... min to read
Listen
মূলভাব: গতিশীলতা বা প্রবাহমানতাই জীবনকে প্রান্তবন্ত করে তােলে, আর স্থবিরতা আত্মার মৃত্যু ঘটায়।
Post a Comment