সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের পার্থিব জীবনে চাওয়া-পাওয়া কোনােদিন শেষ হয় না। নতুন নতুন পাওয়া মানুষের মনে নতুন নতুন অভাববােধ জাগ্রত করে। এ অতৃপ্তি মানুষের মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে। মহাসাগরের অসংখ্য রত্নরাজির অফুরন্ত ভাণ্ডার পর্যন্ত সেঁচে আনতে চায়। সম্পদের পাহাড় গড়লেও তার সন্তুষ্টি আসে না। সুখ তার কাছে কেবলই পলায়নপর সােনার হরিণ হয়ে তাকে হাতছানি দেয়, কিন্তু ধরা দেয় না। সম্পদের প্রতি মানুষের অতিরিক্ত লােভ মানুষকে যান্ত্রিক করে তােলে। সম্পদ আহরণ নিয়েই চলে সব ব্যস্ততা। জীবনের যে অপরাপর উদ্দেশ্য আছে, কর্তব্য আছে, মানুষ তা ভুলে যায়। পার্থিব তুচ্ছ বস্তুগত ধন এভাবে আহরণ করতে গিয়ে সে অন্যায়, অত্যাচার, খুন, ব্যভিচার ইত্যাদি জঘন্য কাজ করতেও কুণ্ঠাবােধ করে না। এ পাওয়া না পাওয়ার মাঝে নিমজ্জিত থেকে সে কখনােই সুখের নাগাল পায় না। কারণ অতৃপ্তির বেদনা সবসময় তাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারে। অপরপক্ষে জ্ঞানী ব্যক্তি অল্পতেই তুষ্ট থাকেন। অর্থসম্পদকে ঘিরে তার চাওয়া কম। চলার জন্যে যেটুকু প্রয়ােজন ততটুকু পেলেই তিনি তৃপ্ত। অতৃপ্তির বেদনা তাকে কখনােই গ্রাস করতে পারে না। এআত্মতৃপ্তিই তাঁর মনােবল বাড়িয়ে দেয়। পার্থিব ধনসম্পদ দু পাশে পায়ে ঠেলে নির্দ্বিধায় এগিয়ে যায় জীবনের প্রকৃত গন্তব্যের দিকে যেখানে রয়েছে। মনােতুষ্টির অপার সুখ।
মন্তব্য: তুষ্ট হৃদয় সাগরের চেয়েও বিশাল। যে হৃদয় চাওয়া-পাওয়ার সীমাবদ্ধতা মেনে তুষ্ট থাকে সে হৃদয়ই গরীয়ান। তাই মানুষকে পরিতৃপ্ত হৃদয়ের বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হবে ।
Post a Comment