সম্প্রসারিত-ভাব : যার সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে, তাকেই আমরা সাধারণভাবে আত্মীয় বলে গণ্য করে থাকি। কিন্তু শুধু রক্তের সম্পর্ক দ্বারাই আত্মীয়তার সম্পর্ক নির্ণীত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। কারণ, রক্তের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও যদি কারাে সাথে কারাে মনের মিল না থাকে, তবে আত্মীয়তার সে সম্পর্ক স্থায়ী হয় না। মনের মিল ও পারস্পরিক সমঝােতার মাধ্যমেই প্রকৃত আত্মীয়তার সৃষ্টি হয়। হীন মনােভাবাপন্ন ও সংকীর্ণচিত্ত ব্যক্তিদের স্থান, সমাজ বা জাতি কারাে কাছেই নেই। আত্মকেন্দ্রিক হিসেবে সর্বদা তারা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তারা সমাজে ঘৃণ্য ও সকলের পরিত্যাজ্য। মহৎ ব্যক্তিরা সর্বদা অপরের মঙ্গল কামনা করে থাকেন। পরােপকার করার সুযােগ পেলে নিজেকে তারা ধন্য মনে করেন। তাদের আচার ব্যবহার ও কাজের মাধ্যমে সবার সাথে তারা আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরূপ মহৎ আচরণ দ্বারাই ইসলামের প্রাথমিক যুগে মদীনার আনসারগণ মক্কা থেকে আগত মােহাজেরগণকে শুধু ভাই হিসেবেই গ্রহণ করেনি, বরং নিজের বিষয় আশয় ভাইয়ের মত ভাগ করে দিয়েছিলেন। একমাত্র মনের মিলের জন্যই মহানবী (স) সকল মুসলমানকে এক মহান ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে পেরেছিলেন। তাইতাে বিশ্বের সকল মুসলমান ভাই ভাই। বর্তমান যুগেও পত্রিকার পাতা খুললে লক্ষ্য করা যায়, রক্তের সম্পর্কের সহােদর ভাই আরেক ভাইয়ের গলায় নির্বিচারে ছুরি চালাচ্ছে। কিন্তু মানুষ মরে গেলেও আত্মার বন্ধন ছিন্ন হয় না। তাই তাে বলা হয়ে থাকে, শুধু রক্তের সম্পর্কে আত্মীয়তা হয় না, আত্মায় আত্মায় মিলনেই সৃষ্টি হয় পরম আত্মীয়তা। আত্মার মিলন হলেই সেটা হবে পরম আত্মীয়।
আত্মার মিলন হলেই মানুষ মানবীয় গুণাবলির অধিকারী হয়। পরম আত্মীয় হলেই মানুষ পরকে ভালােবাসে। তার মনে হিংসা, দ্বেষ স্থান পায় না।
Post a Comment