মানুষকে শিক্ষা লাভ করিতে দেওয়া হয় না
সম্প্রসারিত-ভাব : কাজের ভুল হলেও জীবনের জন্যে কাজ করতে হয়। ভুল করার মধ্যেই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কাজ না করলে ভুলও হবে না। কর্মহীন জীবন স্থবির হয়ে যায়। জীবনে চলার পথে নানা কাজে ভুল হয় বলে মানুষ কখনও থেমে থাকে না। ভুলের মধ্য দিয়েই জীবনের নতুন নতুন অভিজ্ঞতাকে অর্জন করে নেয়। ভুল শুধরে শুধরে মানুষ কাজে দক্ষ হয় এবং ক্রমেই ভুলের মাত্রা কমতে থাকে। যারা শিখতে চায় তাদের কাজে ভুল হবেই। শিক্ষা গ্রহণ মানব জীবনের সর্বকালের বৈশিষ্ট্য। শিক্ষার ভিতর দিয়েই মানুষ জীবনের পথে এগিয়ে চলে। সব কাজই যে নির্ভুল হবে এমন কোন কথা নেই। কারণ, অনেক কাজেই উদ্যোগী মানুষকে প্রথম অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়। সেখানে ভুল-ভ্রান্তি হওয়া ষাভাবিক কাজের বেলায় নির্ভুল কাজ করতে হবে এমন শর্ত আরােপ করে দেওয়াই ভুল। কেননা নির্ভুল কাজের অজ্গিকার কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই জীবনে ভুল স্বীকার করে নেওয়াই যথার্থ সত্য, অস্বীকারে থাকে মিথ্যার চাতুর্য। ভুল-ভ্রান্তি সত্যকে পাওয়ার পথে প্রতিবন্ধক বা অন্তরায় নয়, বরং ভুল-ভ্রান্তি থেকে বাস্তব-অভিজ্ঞতা লাভ করেই মানুষ প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটন করে। তাই জীবনে ভুলকে অপরাধ না ভেবে স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য বলে গ্রহণ করতে হবে। তবে অসতর্কতা ও অসাবধানতার জন্য যে ভুল হয় তা ভুলের পর্যায়ে পড়ে না, কেননা তা সতর্কতার অভাবে সংঘটিত হয়। পৃথিবীতে যারা মিথ্যা ও ভুল-ভ্রান্তিকে বাদ দিয়ে কেবলমাত্র সত্য লাভের পথ খোঁজে তারা কখনই সত্যের নাগাল পায় না। মানব জীবনের একেকটি ভুল মানুষকে এক বা একাধিক সত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। শিশু যেমন আছাড় খেয়ে খেয়ে হাঁটতে শেখে, মানুষও তেমনি ভুল-ভ্রান্তির মধ্য দিয়ে সত্যকে চিনে নেয়। ভুল করে এবং ভুল শুধরে মানুষ শিক্ষার অপূর্ণতা দূর করে। জীবনের জন্য কাজ আর কাজ করতে গেলেই ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক, তাই ভুল করাটা দোষের নয় বরং ভুলের ভয়ে কাজ থেকে বিরত থাকাই দোষের।
Post a Comment