সম্প্রসারিত-ভাব : রবীন্দ্রনাথ এক জায়গায় লিখেছেন, 'উপস্থিত যাহাই প্রতীতি হয় তাহাকেই সত্য বলিয়াই ধরিয়া লইলে বিজ্ঞানে বাধে, তেমনি উপস্থিত যাহাই আমাদিগকে মুগ্ করে তাহাকেই সুন্দর বলিয়া ধরিয়া লইলে আনন্দের বিঘ্ন ঘটে। আমাদের প্রতীতিকে নানা দিক দিয়ে সর্বত্র যাচাই করিয়া লইলে তবেই তাহার সত্যতা স্থির হবাে.....। বাস্তবিক জগতে বাইরের রূপ দেখে কাউকে চেনা অসম্ভব। বাহ্যিক সমতা আমাদের প্রায়ই বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। কে কি রকম প্রকৃতির, কার কি বৈশিষ্ট্য তার জন্য আমাদের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নজর রাখতে হবে। তাই বােধ হয় একটি প্রবাদে আমাদের সতর্ক করা হয়েছে, 'চকচক করলেই তা সােনা হয় না। আমাদের সমাজে একশ্রেণীর মানুষ আছে যারা চেহারা এবং পােশাকের চাকচিক্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টিকারী। আকারে মানুষের মত দেখতে হলেও এরা প্রকৃতিতে পশুর মত, বাহ্যিক ব্যবহারে এদের হীনতা, নীচতা, লােভ ধরা পড়ে না। কিন্তু যখন বিশেষ মুহূর্ত আসে, তখন এরা পাশব প্রবৃত্তিগুলাে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর যারা মহৎপ্রাণ, উদার হৃদয়ের মানুষ তারা অমৃতের পুত্র হিসেবে দেশ ও জাতিকে অমরত্বের পথ দেখায়। তাদের সেই উদার আহ্বানে মানুষের অন্তরে প্রেমের বন্যা বয়, হিংসা দ্বেষ ত্যাগ করে মানুষ অনুপ্রাণিত হয় মহৎ কর্মে। কাক যেমন বসন্তের স্বরূপ বুঝতে পারে না, স্বার্থান্ধ লােভী মানুষও তেমনি মহত্ত্ব ত্যাগ ইত্যাদির সুখ জানে না। কোকিল বসন্তের আগমনে প্রকৃতিকে জাগিয়ে তােলার জন্য মিষ্টি সুরে ডাকে। মহৎ উদার হৃদয়ের মানুষও বিপদের দিনে দেশ ও জাতিকে উদার আহ্বানে উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত করে।
ভাবসম্প্রসারণ কাক কালাে, পিক কালাে, মিথ্যা তেদ খোঁজা- বসন্ত যেমনি আসে ভেদ যায় বােঝা
Sraboni
... min to read
Listen
মূলভাব : বাইরের থেকে কাউকে দেখে তার মূল্যায়ন করা অসম্ভব। কাক এবং কোকিল প্রায় একই রকম দেখতে; দুজনেরই গায়ের রঙ কালাে। বাইরের রূপে তাদের পার্থক্য সামান্য হলেও অন্তরের প্রকৃত রূপে তাদের পার্থক্য পর্বত প্রমাণ। বসন্ত সমাগমে কোকিল মিষ্টি সুরে ডেকে আমাদের মনপ্রাণ ভরিয়ে দেয় আর কাক স্বভাবগত কর্কশ স্বরে ডেকে তখন আমাদের বিরক্তি উৎপাদন করে চলে।
Post a Comment