অন্যায়, শােষণ এবং বঞ্চনার শিকার কোনাে ভূখণ্ডের স্বাধীনতার জন্য সাধারণত যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাকে স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। প্রকৃতপক্ষে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের মধ্যেই এ যুদ্ধের পটভূমি দানা বেঁধেছিল। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অন্যায়-অবিচারের মুখে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল। এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষেরা যখন অন্যায় এবং শােষণের প্রতিবাদ করেছিল তখন পাকিস্তানী শাসক এদেশের বেসামরিক মানুষের ওপর সশস্ত্র সৈন্য লেলিয়ে দেয়। স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষদের দমুন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে দখলদার বাহিনী গণহত্যা চালায় যা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ সূচনা করে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ধর্ম, বর্ণ, গােত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেণির লােক দখলদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে সাধারণ অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তারা ব্যাপক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ করে। মুক্তিবাহিনী নামে একটি বাহিনী গঠন করা হয় যারা দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে গেরিলা যুদ্ধ করে। দখলদার বাহিনী স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় এদেশের বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং শিক্ষকসহ বেসামরিক লােকদের নির্বিচারে হত্যা করে। কিন্তু তারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পারেনি। তারা এদেশের মানুষের ইচ্ছাশক্তির নিকট পরাভূত হয়। কারণ, স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষের অস্ত্র খুব বড় হওয়ার দরকার হয় না। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এদেশের মানুষ ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করে এবং বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হয়। প্রতি বছর আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করি।
Related Posts
লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
Post a Comment