ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে যে জীবিকা উপার্জন করে সেই ভিক্ষুক। ভিক্ষুকরা কখনাে কখনাে ভিক্ষার জন্য এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে যায় কিংবা দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়ায়। ভিক্ষাবৃত্তি তাদের একমাত্র বৃত্তি যার ওপর তারা ও তাদের সমগ্র পরিবার নির্ভর করে। তবে এটি পেশা নয়। বরং এটি এমন একটি মারাত্মক সামাজিক অবক্ষয় যা সমাজে ঢুকে সমগ্র সমাজটাকে নিঃশেষ করে ফেলে। এটি একটি সামাজিক সমস্যা, কারণ এটি সমাজকে কোনাে কিছু দেয় না। এটি ভিক্ষুকদের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদা হানি করে। এটি ভিক্ষুকদের মধ্যে শ্রমের প্রতি এক প্রকার অশ্রদ্ধা সৃষ্টি করে। তারা নিজেদেরকে গৌণ ভাবে এবং অলসতা গড়ে তােলে। এই সমস্যার পেছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে। প্রথমত বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ, যেখানে শতকরা ষাট ভাগ লােক দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। অধিকন্তু, আয়ের বৈষম্য এখানে খুব বেশি। দ্বিতীয়ত, অন্ধত্ব, বধিরতা, বাকশক্তিহীনতা, খোঁড়ামির মতাে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দরিদ্রদের জীবিকা উপার্জনের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে বাধ্য করে। তৃতীয়ত, এখানে বেকার সমস্যা ভয়াবহ। ফলে অনেক বেকার লােক পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেয়। চতুর্থত, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায়শ ঘটে যা হাজার হাজার লােককে বাস্তুহীন, অসহায় ও কর্মহীন করে তােলে। এটি অবশেষে তাদেরকে পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে বাধ্য করে। আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তির ফলাফল হলাে (ক) দেশ জনশক্তি থেকে বঞ্চিত হয় এবং (খ) অনেক সময় ভিক্ষুকরা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয় যাহােক, আমাদের দেশ থেকে এ সমস্যা দূর করা খুব জরুরি। এটা দূর করতে সর্বাগ্রে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদেরকে পুনর্বাসিত করতে হবে। নিষ্কর্ম ব্যক্তিদের বয়স্ক ভাতা প্রদান করতে হবে। আর এভাবে আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
Related Posts
লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
Post a Comment