আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন যুগে বিশ্বায়ন একটি বহুল আলােচিত শব্দে পরিণত হয়েছে। মূলত, এটা হচ্ছে সীমান্তহীন বাজার তৈরি করে সারাবিশ্বে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু জীবনের অনেক ক্ষেত্রে এর সুদুরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। অত্যাধুনিক যােগাযােগ মাধ্যম এবং দ্রুত পরিবহন সুবিধার উন্নয়নের সাথে সাথে পৃথিবী নিকটতর হয়েছে। এখন আমরা পৃথিবীর দূরতম কোণায় কী ঘটছে তা মুহূর্তের মধ্যেই জানতে পারি এবং সম্ভব স্বল্পতম সময়ে যে কোনাে দেশ ভ্রমণ করতে পারি। বিশ্বের দেশগুলাে এখন একটি গ্রামের অনেকগুলাে পরিবারের মতােই। এমনকি তারা পাশের বাড়ির প্রতিবেশীর মতাে তাদের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে পারে। কোনাে দেশ যদি বিপদগ্রস্ত হয় তাহলে অন্যরা সাথে সাথে এর সহযােগিতায় এগিয়ে আসতে পারে। কিন্তু বিশ্বায়ন দরিদ্র দেশগুলাের চেয়ে পুঁজিবাদী দেশগুলাের জন্য বেশি সুযােগ সৃষ্টি করছে। সাহায্য ও সহযােগিতার নামে শিল্পসমৃদ্ধ পুঁজিবাদী দেশগুলাে দরিদ্র দেশগুলাে সহজলভ্য সম্ভা শ্রম শােষণ করছে। উন্নয়নের বৈশ্বিক কৌশল দরিদ্র দেশগুলাের জনগনকে উন্নততর কর্মসুযােগের প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু একই সাথে এটা পুঁজিবাদীদের উচ্চহারে লাভেরও প্রতিশ্রুতি দেয়। উন্নয়নশীল দেশগুলাের শােষিত ও দরিদ্র শ্রমিকরা বিশ্বায়িত শক্তিশালী পুঁজিবাদের সাথে তাল মেলাতে পারে না। ফলে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে দূরত্ব বেড়েই চলেছে। ধনী দেশগুলােকে এসব সমস্যা দূরীকরণে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু ধনী/সম্পদশালী দেশগুলাে কখনােই এটা হতে দিবে না। তাই এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট যে, বিশ্বায়ন দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলাের জন্য পুরােপুরি শুভকর নয়।
Related Posts
লেখা-লেখি করতে ভালোবাসেন? লেখালেখির মাধ্যমে উপার্জন করতে যুক্ত হতে পারেন আমাদের সাথে Telegram এ!
Post a Comment